Biswakarma Puja 2023: পুরাণমতে ব্রহ্মপুত্র বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পের দেবতা। কথিত আছে তিনি গোটা বিশ্বের নকশা তৈরী করেছিলেন। বিভিন্ন পেশার মানুষ বিশ্বকর্মা পুজো করেন। উন্নত ভবিষ্যত, নিরাপদ কাজের পরিস্থিতি এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, সর্বোপরি নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্যে প্রার্থনা করে এই পুজো হয়। মূলত কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, হস্তশিল্প, দোকান, যন্ত্রপাতি রয়েছে এমন জায়গায় বিশ্বকর্মা পূজা হয়ে থাকে।
বাড়িতেও এই দিন বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, গাড়ি, সাইকেল প্রভৃতি ধুয়ে পরিষ্কার করে বিশ্বকর্মা পূজা হয়ে থাকে। আসুন জেনে বাড়িতে নিয়ম নিষ্ঠা মেনে কিভাবে বিশ্বকর্মা পুজো করবো। Biswakarma puja 2023 সম্পর্কে রইলো সম্পূর্ণ আপডেট।
আরও পড়ুন:
- Krishna Janmashtami 2023 পুজোর Date,সময়সূচি, নিয়ম ও বিধি, জন্মাষ্টমীর ব্রত কথা। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী ২০২৩ বাংলা
- Ganesh Chaturthi 2023 date, সময়সূচি, পুজো বিধি
আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !
Contents
Biswakarma Puja 2023
বিশ্বকর্মা পূজা ২০২৩ সময়সূচি:
চলতি বছর বিশ্বকর্মা পুজোর তারিখ নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পূজা হয়ে থাকে।এবছর তা পড়েছে ইংরেজির ১৮ সেপ্টেম্বর এবং বাংলার ৩১ ভাদ্র, ১৪৩০ সোমবার।
বিশ্বকর্মা পূজা বিধি:
বাড়িতে পটে পুজো পদ্ধতি বিধি সহ বর্ণনা করা হলো।
- সবার প্রথমে তো ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করে, সুন্দর করে আল্পনা দিতে হবে যেটা যেকোনো পুজোর আগেই করা হয়ে থাকে।
- পুজোর জায়গা তে আসন পেতে বিশ্বকর্মা বাবার যে পটে পুজো হবে তা স্থাপন করবো।
- পুজো শুরু করার আগে হাতে গঙ্গা জল ছিটিয়ে নিয়ে মাথায় তিনবার ছিটিয়ে নিতে হবে।
- এরপর জ্বালবো ঘি এর প্রদীপ এবং ধূপকাঠি।
- বিশ্বকর্মা পুজো তে ঘুড়ি ওড়ানো হয়ে থাকে। পুজোর সময় বাবা কে ঘুড়ি অর্পণ করা must. তাই বাবার পথের পশে রাখবো একটি ঘুড়ি।
- এবার মঙ্গলঘট স্থাপন করার জন্যে ঘটের নিচে দিতে হবে মাটি। তার জন্যে নেবো যেকোনো শুদ্ধ জায়গার মাটি। মাটি ঢেলা পাকিয়ে হাতে করে সামান্য চাপ দিয়ে পথের সামনে রাখবো তার ওপর দেব সিঁদুর ফোঁটা, পঞ্চশস্য, ফুল আর দূর্বা ছড়িয়ে নেবো।
- একটি ঘট নিয়ে সিঁদুর দিয়ে তাতে স্বস্তিকচিহ্ন এঁকে নিতে হবে।
- এবার সেই ঘট জলপূর্ণ করে, তাতে দিতে হবে একটি গোটা সুপুরি, কিছু আতপচাল, হলুদ গাঁঠ, দূর্বা।
- এরপর বিজোড় আম্রপল্লব নিয়ে তাতে সিঁদুর ফোঁটা দিয়ে ঘটের উপর রাখবো। এবার সেই ঘটে উপর রাখব একটি শিসযুক্ত ডাব।
- এবার মঙ্গলঘট উলু ধ্বনি সহ স্থাপন করবো পটের সামনে সাজিয়ে রাখা মাটির ডেলার উপর।
- ঘটের উপর ঘটাচ্ছদন হিসেবে অর্পণ করতে হবে একটি গামছা বা লাল চেলি।
- ঘটাচ্ছদন দেওয়ার পর ঘটের উপর সাজিয়ে দেবো চাঁদমালা।
- যেকোনো পুজো শুরু করার আগে সিদ্ধিদাতা গনেশের পুজো হয়। তাই সব সাজিয়ে নেওয়ার পর এবার বিশ্বকর্মার পটের বামদিকে একটি পানপাতা রেখে তাতে দেব একটি সিঁদুর ফোঁটা, রাখবো একটি গোটা সুপুরি এবার ওই সুপুরিকেই আমরা গনেশ স্বরূপ পুজো করবো। একটু আতপ চাল পানপাতার উপর ছড়িয়ে নিয়ে সুপুরির উপর দেবো সিঁদুর এর ফোঁটা এবং লাল চন্দনের তিলক। গনেশ কে অর্পণ করে দেন করবো পৈতে যা ওই সুপুরির গায়ে জড়িয়ে দেবো। গনেশ এর বস্ত্রস্বরূপ দেবো মৌলি সুতো।
- হাতে ফুল ও দূর্বা নিয়ে ওম গন গনপতায় নমঃ গনেশ মন্ত্র জপ করে তা অর্পণ করবো শ্রী গনেশ এর উদ্দেশে ।
- গনেশ পুজো সমাপনের পর হাতে দূর্বা, বেলপাতা, পুষ্প নিয়ে নমঃ পঞ্চদেবতায় নমো নমঃ মন্ত্রোচ্চারণ করে ঘটে নিবেদন করবো পঞ্চ দেবতার উদ্দেশে।
- আবার হাতে ফুল, বেলপাতা, ১১ টি দূর্বা নিয়ে ঘটে নিবেদন করবো বাবা বিশ্বকর্মার উদ্দেশে।
- ঘটের উপর বাবার উদ্দেশে নিবেদন করবো পৈতে।
- বাবার পটে সাদা চন্দন দিয়ে তিলক কেটে দিতে হবে বাবা এবং বাবার বাহন হস্তীকে।
- বাবার পট এবং ঘটে নিবেদন করবো ফুলের মালা।
- বিশ্বকর্মা পুজোতে যে দুটি জিনিস প্রধান তা হলো বাতাবি লেবু এবং কাশফুল। বাবার ছবির সামনে বাতাবিলেবু এবং কাশফুল নিবেদন করতে হবে।
আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !
- বাবা কে বস্ত্রস্বরূপ দিতে হবে মৌলি সুতো।
- এবার বাড়িতে থাকা কিছু যন্ত্রপাতি একটি থালাতে সাজিয়ে বাবা কে নিবেদন করবো। সেই থালাতে ছড়িয়ে দেবো ফুল, দূর্বা, এবং চন্দনের ফোটা লাগিয়ে দেবো সেগুলিতে।
- এবার পালা অঞ্জলীর। হাতে ফুল, দূর্বা নিয়ে করজোড়ে উচ্চারণ করবো
- বিশ্বকর্মা পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র
দেবশিল্পী মহাভাগ দেবনাং কার্যসাধক
পূজাং গৃহন বিধিবৎ কল্যানাং কুরুমে সদা।
আয়ুর্যোগ বলং দেহি শিল্পে দেহি শুভাং মতি।
ধনং দেহি, যশ দেহি, বিশ্বকর্মান প্রসীদ মে,
শিল্পাচার্য্যাং নামস্তভ্যং নানালঙ্কার ভূষিতম।
বিঘ্নবিনাশায় কল্যানায় কুরুমে সদা।
এসো সচন্দন পুষ্প বিল্বপত্রাঞ্জলি
নমঃ বিস্বকর্মণ্যে নমঃ। - পুস্পাঞ্জলির পর করজোড়ে প্রণাম করে এবার করবো বাবাকে ধুপ ধুনো দেওয়া উচিত।
- তারপর পালা অর্ঘ্য নিবেদনের তার জন্যে নিতে হবে সিঁদুরের ফোঁটা দেওয়া একটি পানপাতা, তার ওপর নেবো সুপারি, হলুদের গাঁঠ, একটি কয়েন। তা নিবেদন করবো বাবার চরণে।
- এরপর ভোগ নিবেদন।
- আরতি করে প্রণাম মন্ত্র জপ করে পুজো সমাপন।
- বিশ্বকর্মা প্রণাম মন্ত্র
দেবশিল্পী মহাভাগ দেবানাং কার্যসাধক
বিস্বকর্মন্নমস্তভ্যং সর্বাভীষ্টপ্রদয়ক।
জয় বাবা বিশ্বকর্মা।
বিশ্বকর্মা পূজা ভোগ নিবেদন:
- পঞ্চদেবতার উদ্দেশে নিবেদন করা হয় নৈবেদ্য। একটি থালাতে পাঁচ ভাগ করে নেবো আতপচাল, চাল এর ওপর রাখবো কলার টুকরো পাঁচভাগে আলাদা আলাদা করে। একেই নৈবেদ্য বলে।
- বাবা বিশ্বকর্মার উদ্দেশে নিবেদন করা যেতে পারে মিষ্টি, নারকেল নাড়ু must, এছাড়া মুড়কি, সাতরকমের গোটা ফল, পান করার জন্যে জল।
বড়ো বড়ো কারখানা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলোতে খুব ধুমধাম করে বিশ্বকর্মা পুজো পালিত হয়। পুজোর পর পালা ঘুড়ি ওড়ানোর। বাবা বিশ্বকর্মা সকলকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ করুক এই কামনা নিয়ে রইলো বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা।
আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !