Ganesh Chaturthi 2023: শাস্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধিদাতা গনেশের পুজো করলে তাঁর ভক্তদের যেকোনো কাজে সাফল্য লাভ হয়, আর্থিক অবস্থা ভালো হয় এবং মনোস্কামনা পূর্ণ হয়। শিব ও পার্বতী নন্দন সিদ্ধিদাতা গনেশ হলেন বুদ্ধি, সমৃদ্ধি এবং সৌভাগ্যের দেবতা। দেবতাদের মধ্যে সবার প্রথম স্থান তাঁরই। তাই যেকোনো বিশেষ কাজ, অনুষ্ঠান, বা পুজো শুরুর আগে বিঘ্নহর্তা কে পুজো করা must. কিন্তু বছরের এক বিশেষ দিন রয়েছে যেদিন শ্রীগণেশের জন্মোৎসব হিসেবে পালন করা হয় যা গনেশ চতুর্থী নামেও পরিচিত। এই পবিত্র দিনটিতে সিদ্ধিদাতার আরাধনা করা হয়ে থাকে।
আগে মূলত ব্যবসায়ী মানুষজন এই পুজোর আয়োজন করতেন কিন্তু এখন বাড়িতে বাড়িতে পূজিত হন শ্রীগনেশ। বাংলার মানুষজনের কাছে যেমন দুর্গোৎসব হলো প্রধান উৎসব, তেমনি মহারাষ্ট্রের মানুষজন এর প্রধান উৎসব হলো গনেশ চতুর্থী। অতন্ত্য জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে প্রায় ১০ দিন ধরে সেখানে পালিত হয় গনেশ উৎসব। কথিত আছে গনেশ সমস্ত বাধা বিঘ্ন নাশ করে জীবনে নিয়ে আসে সুখ ও সমৃদ্ধি। তাই আমরা বাড়িতে আচার নিয়ম পালন করে বিধি পূর্বক কিভাবে গনেশ চতুর্থী পালন করবো আসুন জেনে নেওয়া যাক Ganesh Chaturthi 2023 সময়সূচি।
আরও পড়ুন:
- Krishna Janmashtami 2023 পুজোর Date,সময়সূচি, নিয়ম ও বিধি, জন্মাষ্টমীর ব্রত কথা। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী ২০২৩ বাংলা
- শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা PDF|Teachers Day Speech in Bengali 2023|5th September Speech
আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !
Contents
Ganesh Chaturthi 2023
গনেশ পুজো ২০২৩ সময়সূচি:
সাধারণত ভাদ্র-আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী গনেশ চতুর্থী(Ganesh Chaturthi 2023) হিসেবে পালিত হয়। পঞ্জিকা অনুযায়ী এইবছর এই বিশেষ দিনটি পড়েছে বাংলা ১ লা আশ্বিন ১৪৩০ এবং ইংরেজির 19 সেপ্টেম্বর 2023 মঙ্গলবার। চতুর্থী তিথি থাকবে ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.২২ মিনিট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.৫৫ মিনিট পর্যন্ত।
গনেশ পুজো বিধি:
আপনাদের জন্যে রইলো বাড়িতে গনেশ পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র। এই Ganesh Chaturthi 2023 আপনাদের জীবনে নিয়ে আসুক সমৃদ্ধি। আসুন জেনেনি পুজো পদ্ধতি।
- সবার প্রথমে ঠাকুর ঘর ভালো করে পরিষ্কার করে সুন্দর করে আল্পনা দিয়ে সাজিয়ে নিন।
- এবার একটি কাঠের জলচৌকি পাতুন, গনেশের মূর্তি স্থাপন পূর্ব অথবা উত্তর-পূর্ব দিকে করা উচিত। জলচৌকির উপর বিছিয়ে নিন লাল অথবা হলুদ কাপড়।
- এবার জলচৌকির উপর নেবো তিনটি পানপাতা, পানপাতায় দেবো সিঁদুরের ফোটা, গোটা আতপচাল, তিনটি করে দূর্বা, প্রতিটি পাতায় একটি করে হলুদ গাঁঠ, এবং এক টাকার কয়েন।
- চৌকির উপর পানপাতা সাজিয়ে নেওয়ার পর মাঝের পানপাতার উপরে স্থাপিত হবে শ্রীগণেশের মূর্তি, দুইপাশের পানপাতাতে ঋদ্ধি এবং সিদ্ধির স্থান। ঋদ্ধি- সিদ্ধি হলেন গনেশ এর দুই পত্নী। বাকি পানপাতা দুটিতে স্থাপন করবো একটি করে গোটা সুপুরি সেই সুপুরিকে আমরা ঋদ্ধি-সিদ্ধি রূপে আরাধনা করবো ।
- এবার প্রজ্বলন করবো ঘিয়ের প্রদীপ এবং ধুপ।
- এবার দুধের মধ্যে ঘি, মধু, বাতাসা, দই দিয়ে বানিয়ে নেবো পঞ্চামৃত। সেই পঞ্চামৃত দিয়ে হবে শ্রী গনেশ এর স্নানাভিষেক। এরপর একে একে গঙ্গাজল, ফুলের পাপড়ি চন্দন মিশ্রিত জল দিয়ে করবো শ্রীগনেশের অভিষেক।
- এবার গণেশের মূর্তি মুছে নিয়ে স্থাপন করবো মাঝে রাখা পানপাতায়।
- মঙ্গলঘট স্থাপন করার আগে ঘটের নিচে নেবো কোনো শুদ্ধ জায়গার মাটি, মাটির উপর দেবো সিঁদুর ফোঁটা, আতপ চাল, দূর্বা, ফুলের পাঁপড়ি।
- মঙ্গলঘটে সিঁদুর ফোটা দিয়ে এঁকে নেবো স্বস্তিক চিহ্ন। ঘট জলপূর্ণ করে তাতে নেবো কিছু চাল, একটি সুপুরি, দূর্বা, ঘটের ওপর নেবো বিজোড় পাতা যুক্ত আম্রপল্লব। আম্রপল্লবের প্রতিটা পাতায় দেবো সিঁদুর ফোটা। আম্রপল্লবের উপর রাখবো সিঁদুর ফোটা যুক্ত পানপাতা। পানপাতার উপর রাখবো শিস যুক্ত দাবি বা একটি নারকেল।
- এবার সাজানো মঙ্গলঘট ভগবানের সামনে স্থাপন করবো সাজিয়ে রাখা মাটির উপর।
- ঘটের ওপর ঘটাচ্ছদন হিসেবে দেবো একটি নতুন গামছা, একটি পৈতে এবং চাঁদমালা।
- হাতে নেবো লাল জবা এবং দূর্বা এবার ওঁম গন গণেশায় নমঃ গনেশ মন্ত্র জপ করে সেই ফুল নিবেদন করবো মঙ্গলঘটে। তারপর পঞ্চ দেবতার উদ্দেশে ঘটে ফুল অর্পণ করে শুরু করবো পুজো।
- শ্রীগণেশ এবং তার দুই স্ত্রীর মাথায় দেবো লাল চন্দন এর তিলক।
- তিনটি লবঙ্গ, তিনটি এলাচ নিয়ে গনেশ এবং তার দুই পত্নীকে অর্পণ করবো।
- সিদ্ধিদাতার কপালে দেবো সিঁদুর ফোটা ও কিছু আতপচাল। বস্ত্রস্বরূপ দেবো মৌলি সুতো গনেশ এবং তাঁর পত্নীদের।
- এইদিন ২১ টি দূর্বা দেন করা শুভ মানা হয়ে থাকে তাই শ্রীগণেশ কে তা অর্পণ করবো।
- এবার পালা পুস্পাঞ্জলির হাতে ফুল ও দূর্বা নিয়ে করজোড়ে উচ্চারণ করবো- গনেশ পূজা পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র
একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম।
বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।।
ফুল দূর্বা দিয়ে ৩বার অঞ্জলি দেবো।
- অঞ্জলীর পর মঙ্গল অর্ঘ্য দানের জন্যে থালা সাজাবো। একটি থালায় নেবো পানপাতা সিঁদুরফোঁটা দেওয়া, তাতে একটাকার কয়েন, সুপুরি, হলুদের গাঁঠ, ফুল দূর্বা, পৈতে এবার এই অর্ঘ্য দেবো শ্রীগণেশকে।
- এবার পালা ভোগ নিবেদনের।
- ভোগ নিবেদনের পর পঞ্চপ্রদীপ সাজিয়ে আরতি। যাঁরা উপবাস রাখবেন তাঁরা আরতির পর অবশ্যই গনেশ ব্রতকথা শুনবেন।
- এবার ১০৮ বার ওঁম গন গনপতায় নমঃ গনেশ মন্ত্র পাঠ করে পুজো সমাপন করতে হবে ।
আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !
গনেশ পুজো ভোগ নিবেদন:
শ্রীগণেশ হলেন খাদ্যরসিক এমন মান্যতা রয়েছে। তাই তাঁকে নানারকম ভোগ নিবেদন করা যেতেই পারে। তবে ভগবানের অতি প্রিয় যে লাড্ডু এবং মোদক তা আলাদা করে উল্লেখ করার প্রয়োজন বোধ হয় নেই। ভগবানের মূর্তি তে দেন হাতে লাড্ডু নিবেদন করলে এবং বাহন ইঁদুর কে একটি লাড্ডু নিবেদন করলে ভগবান অতি প্রসন্ন হন। এছাড়া ভোগ হিসেবে নিবেন করতে পারেন ৫ রকমের গোটা ফল, মোদক, লাড্ডু, মিষ্টি, মুড়কি, এবং জল। এছাড়া লুচি, তরকারি, পায়েস বা অন্নভোগ নিবেদন করা যেতে পারে। যে যার সাধ্যমতো ভোগ নিবেদন করতে পারেন Ganesh Chaturthi 2023 এ।
সাবধানতা:
- বাড়িতে Ganesh Chaturthi 2023 পুজোর জন্যে সবসময় বামমুখী অর্থাৎ বামদিকে শুঁড় থাকা গনেশের মূর্তি শ্রেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে ডানদিকে শুঁড় থাকা গণেশমূর্তি পুজোর বিশেষ নিয়ম রয়েছে যা মন্দির জাতীয় জায়গার জন্যে উপযুক্ত।
- যে মূর্তিতে গনেশ বসে রয়েছেন এরকম মূর্তি ঘরে নিয়ে আসা উচিত এতে ঘরে সুখ সমৃদ্ধির বাস হয়।
- বিজোড় দিনে গনেশের মূর্তি বিসর্জিত হয়, যেমন ১.৫, ৩, ৫, ৭, ১১ দিনে মূর্তি বিসর্জিত হয়। যতদিন মূর্তি রয়েছে বাড়িতে ততদিন ভক্তি সহকারে পুজোপাঠ করতে হয়।
- কথিত আছে বিসর্জনের দিন লাল কাপড়ে মোদক অথবা লাড্ডু বেঁধে দিলে শ্রীগণেশ প্রসন্ন হন। মূর্তির সাথে সাথে ওই কাপড়ের পুঁটলি ও জলে ভাসিয়ে দিতে হয়।
সকলের জন্যে রইলো Ganesh Chaturthi 2023 এর অসংখ্য শুভেচ্ছা।
আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !