Waheeda Rehman ভূষিতা হলেন ভারতীয় সিনেমা জগতের সর্বোচ্চ সম্মান Dadasaheb Phalke পুরস্কার দ্বারা! কি বলছেন অভিনেত্রী!

Waheeda Rehman, Dadasaheb Phalke: ভারতীয় সিনেমা জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের মধ্যে অন্যতম প্রবীণ নক্ষত্র ওয়াহিদা রেহমান ভূষিত হচ্ছেন দেশের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দ্বারা। মঙ্গলবার 26 সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টের দ্বারা এই খবরটি দেওয়ার সময় অনুরাগ উল্লেখ করেন – এই সময় যখন পার্লামেন্ট নারীশক্তির উদ্দেশে নতুন বিল পাস করেছে এইরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতীয় নারী শক্তির প্রকৃষ্ট উদাহরণ, যিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন সিনেমা জগৎ এবং সোশ্যাল ওয়ার্কে সেই ওয়াহিদাজি কে এই সম্মান প্রদান করতে পেরে তিনি গর্বিত।

ওয়াহিদাজি সেই সব অভিনেত্রীর মধ্যে পড়েন যারা লাইফে অনেক রিস্ক নিয়েছেন। অভিনেত্রীর জীবন সম্পর্কে রইলো একটি ছোট্ট ঝলক-

আরও পড়ুন:

আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !

Waheeda Rehman সম্মানিত হলেন Dadasaheb Phalke award দ্বারা

রইলো অভিনেত্রীর জীবনের ছোট্ট ঝলক:

Waheeda Rehman Dadasaheb Phalke

1938 সালের 3ফেব্রুয়ারী ওয়াহিদা জন্মগ্রহন করেন তামিলনাড়ু রাজ্যে। ওনার পিতা ছিলেন সেই সময়কার ব্রিটিশ গভর্মেন্টের আন্ডারে একজন কালেক্টর। ওয়াহিদারা ছিলেন চার বোন তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট তিনি। ছোট বেলায় ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ছিল ওনার। ছোট থেকেই ওয়াহিদা এবং ওনার ছোট বোন ভারতনাট্যমের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সব কিছু চলছিল খুব ভালোই কিন্তু জীবনে চলার পথে সুর কাটলো 1951 সালে, মারা গেলেন ওয়াহিদার বাবা। মা অসুস্থ, বড়ো দুই বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে তখন। বন্ধ হয়ে গেলো ছোট দুই বোনের পড়াশুনো। সংসারের কথা ভেবে সিনেমায় অভিনয় করবেন বলে ঠিক করলেন ওয়াহিদা রেহমান। ভালো নাচতেন বলে এলো সিনেমায় কাজের সুযোগ। হিন্দি সিনেমা ছাড়াও বিভিন্ন দক্ষিণী ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি।

পরিচালক ও প্রযোজক গুরু দত্তর নজরে পড়লেন ওয়াহিদা। শুরু হলো তাঁর জীবনের এক নতুন অধ্যায়। গুরু দত্ত ওয়াহিদা কে নিয়ে এলেন বোম্বে, ওনাকে সুযোগ দিলেন তাঁর ছবি ‘CID’ তে যেখানে ওয়াহিদার বিপরীতে ছিলেন দেবানন্দ। এই সিনেমার মাধ্যমে ওয়াহিদা পা রাখলেন হিন্দি সিনেমার জগতে। অভিনয়ের গুনে খুব অল্প দিনেই ইন্ডাস্ট্রি এবং দর্শকের মনে জায়গা করে নেন তিনি। 1957 সালে গুরু দত্ত প্রযোজিত ‘পিয়াসা’ ছবিতে গুলাবো চরিত্রে অভিনয় করেন ওয়াহিদা। এই প্রভাবশালী চরিত্র ওনার ক্যারিয়ারকে এক নতুন মোড় দেয়। ‘কাগাজ কে ফুল’ ছবিতে গুরু দত্তর বিপরীতে ওয়াহিদা অভিনয় করেন। দুজনের অন স্ক্রিন কেমিস্ট্রি দর্শকের মনে ধরে। এরপরই গুজব শোনা যায় গুরু দত্তের সাথে সম্পর্কে রয়েছেন ওয়াহিদা।

এই গুজব গুরু দত্ত এবং ওনার স্ত্রী গীতা দত্তের জীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলে। ওয়াহিদা এই কানাঘুসো প্রকাশে স্বীকার না করলেও এটি তাঁর অভিনয় জীবনে প্রভাব ফেলা শুরু করে। ওয়াহিদা গুরু দত্তের থেকে দূরত্ব রাখা শুরু করেন। ‘সাহেব বিবি অর গুলাম’ ছবিতে গুরু দত্তের সাথে ওনার শেষ অভিনয়।

Waheeda-Rehman dadasaheb 2023

আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !

দেবানন্দের সাথে ওনার জুটি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এক অন্য মাত্রা নিয়ে আসে। ‘কালা বাজার’, ‘সোলভা সাল’,’বাত এক বাত কি’, ‘গাইড’ প্রভৃতি ছবির পর Waheeda Rehman কে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। ‘গাইড’ ছবি ওয়াহিদার জীবনের মাইল ফলক বলা যেতে পারে। এছাড়াও দিলীপ কুমার, রাজ কাপুড়ের সাথে তার কেমিস্ট্রি ও লোকে পছন্দ করেছিল। 1970 এর দশকে আসতে আসতে তিনি এক্সপেরিমেন্ট করা শুরু করেন। 1973 সালে প্রথমবার ‘ফাগুন’ ছবিতে তিনি জয়া ভাদুড়ির মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেন যে এটি তাঁর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল কারণ এরপর থেকে ওনার কাছে একে একে মায়ের চরিত্রেরই অফার আসা শুরু হয়।

1974 সালে তিনি বিয়ে করেন ওনার সহ অভিনেতা কমলজিৎকে। সিনেমা জগতের সব ধরণের রোলেই আমরা ওয়াহিদা কে পেয়েছি তা সে ‘ত্রিশুল’ এ অমিতাভের মায়ের চরিত্রই হোক বা ‘কাভি কাভি’ তে অমিতাভের ওয়াইফ এর সব চরিত্রে তিনি মানানসই। 1991 সালে ‘লামহা’ র পরে প্রায় ১২ বছর তিনি সিনেমা জগৎ থেকে সন্ন্যাস নেন। 2000 সাল আসতে আসতে তিনি আবার সিনেমা জগতে ফায়ার আসেন ‘ওম জয় জগদীশ’, ‘রাং দে বাসান্তি’ প্রভৃতি ছবির মাধ্যমে। 1972 সালে উনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিতা হন। এরপর একে একে জাতীয় পুরস্কার ছাড়াও 2011 সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভারত সরকার দ্বারা তিনি সম্মানিত হন।

বিয়ের পর ওয়াহিদা ব্যাঙ্গালোরে শিফট হন। 21নভেম্বর, 2000 সালে ওনার হাসব্যান্ড কমলজিৎ মারা গেলে উনি আবার মুম্বাই ফিরে আসেন। ওয়াহিদার এক ছেলে সোহেল ও এক মেয়ে কসবা দুজনই লেখক। বর্তমানে ওয়াহিদা বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়ার্ক এর সাথে যুক্ত। উনি দেখিয়ে দিয়েছেন নিজের শখ পূরণ করার কোনো বয়স হয়না ছোট থেকে ওনার ফটোগ্রাফির শখ ছিল এখন 85 বছর বয়সে এসে উনি একজন ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার। আফ্রিকার বিভিন্ন জঙ্গলে উনি ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফি করছেন। 2023 সালে তিনি পাচ্ছেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার আমরা ওনার দৃঘায়ু কামনা করি।

অভিনেত্রী দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পাওনা নিয়ে কৃতজ্ঞ। তিনি উল্লেখ করেছেন তাঁর সহকর্মী দেবানন্দের জন্মশতবার্ষিকীতে এই সম্মান পাওনা তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড়ো পাওনা।

২০২৩ সালে কে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত হন (Who won Dadasaheb Phalke Award 2023)?

ওয়াহিদা রেহমান (Waheeda Rehman) ২০২৩ সালে দাদা সাহেব ফালকে সম্মানে ভূষিত হন।

আরও নতুন পোস্ট সবার আগে পেতে Telegram জয়েন করুন !

Leave a Comment